নাজিম উদ্দীন জনি,শার্শা(বেনাপোল)পপ্রতিনিধিঃ যশোরের শার্শায় আত্মহত্যার সংবাদ প্রচার করায় সিনিয়র সাংবাদিক যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক লোকসমাজ পত্রিকার বাঁগআচড়া প্রতিনিধি আজিজুল ইসলাম সন্ত্রাসী কর্তৃক হুমকির শিকার হয়েছেন। এসময় সন্ত্রাসীরা তাকে গালিগালাজ ও বেঁধে রেখে হাত-পা ভেঙে গুঁড়ো গুড়ো করে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে।
আর এঘটনাটি জানাজানি হলে মূহুর্তের মধ্যে স্যোশাল মিডিয়া ফেসবুকে সাংবাদিক সহ সর্বস্তরের মানুষের নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যায়।
হুমকির শিকার সাংবাদিক আজিজুল বলেন, ২২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্য হবিবার রহমান (মেম্বার) কে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে বাগআঁচড়া থেকে বাড়ী ফিরছিলেন। এসময় মধ্য পথে রুদ্রপুর বিলপাড়া মধ্যবর্তী ব্রীজের কাছে পৌঁছালে হুমকির শিকার হন। গোগা বিলপাড়ার কেরামত আলীর ছেলে হুমায়োন কৈফিয়ত তলব করলো আমার কাছে। সে বললো আত্মহত্যার নিউজটা তোমাকে কে করতে বলেছে? কেনো নিউজ করলে তুমি ?
এরপর ফোনে এবং চিৎকার করে তার লোকজনকে সে ডাকতে থাকে। এক পর্যায়ে সে বলে চেয়ারম্যানকে বলেছি তিনি তেমাকে বেন্দে রাখতি বলেছে। হাত-পা ভেঙে গুঁড়ো গুড়ো করে দেবো। কিন্তু অনেকক্ষন অপেক্ষায় ছিলাম, তবে ভাগ্য ভালো আমাকে বাঁধেনি। বাগআঁচড়ায় ওদের কোন আত্মীয়কে নাকি আমার বেঁধে রাখার হুকুম দিয়ে এসেছে।
এবিষয়ে ইউপি সদস্য হবিবার রহমান (মেম্বার) বলেন, আমি ও সাংবাদিক আজিজুল ভাই আমার মোটরসাইকেলে করে আসছিলাম। এসময় রুদ্রপুর ব্রীজের কাছ থেকে হুমাউন চিৎকার করে হুংকার দিয়ে বলে এ ভাই দাঁড়া। আমরা দাঁড়ালে সে আজিজুল ভাইকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলে, তোর এ নিউজ করতে বলেছে কিডা। আর বিলপাড়া থেকে নিউজ করার জন্য কে তোকে তথ্য দিয়েছে। চেয়ারম্যান বলেছে তোর হাত-পা ভেঙে দিতে। তোর সাহস কি করে হয়, আমাদের কাছে না শুনে নিউজ করার। আমি বলি এ নিয়ে পরে বসে নিজেরা মীমাংসা করবো। কিন্তু হুমাউন কোন কথা শোনেনি। আমি মেম্বার, লজ্জায় আমার মাথা কাটা গেছে।
আর এঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে, দৈনিক লোকসমাজ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আনারুল কবির নান্টু ফেসবুকে লেখেন, একটা জিডি করো সকালে।
সাংবাদিক আসাদুজ্জামান লেখেন, ঘৃনা ও প্রতিবাদ জানায়। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন পূর্বক আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি প্রশাসনের প্রতি।
সাংবাদিক এমএ মুন্নাফ খোকন লেখেন, রাজপথে উঠে লাভ নেই। কলম সৈনিক কলম চালিয়ে যুদ্ধ কর। ওদের দুর্নীতি তুলে ধর।
সাংবাদিক শাওন চৌধুরী লেখেন, ঘটনাটি দুঃখজনক, তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
ঝিকরগাছা সেবা সংগঠনের সভাপতি আশরাফুজ্জামান বাবু লেখেন, সত্যের জয় হোক। অশুভ শক্তি নিপাত যাক।
আরও অনেকে লেখেন, নির্ভয়ে আপনি আপনার দায়িত্ব পালন করে যান, সহকর্মীরা আপনার পাশে আছে।
আজিজ ভাইয়ের মত একজন বড় মাপের সাংবাদিককে যদি হুমকি দেয়, তাহলে বসে থাকা যায় না। এর প্রতিবাদ করতেই হবে। আমার মনে হয় প্রত্যেক সাংবাদিককে পাশে থাকা উচিত৷
প্রসঙ্গত, গত ১৬ এপ্রিল শার্শার গোগা বিলপাড়া গ্রামের ইস্রাফিল হোসেনের স্ত্রী হাসিনা খাতুন (৫৫) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পুলিশ আসার আগেই লাশটি নামানো হয় ও কিছু আলামত পুড়িয়ে ফেলা হয়। যে কারনে পুলিশ লাশটি মর্গে পাঠায়।
এই নিউজটি প্রকাশ হওয়ায় ব্যাপক খেপে যান হুমাউন ও তার দলবল। তারই রেশ ধরে গতকাল সে সাংবাদিককে গালিগালাজ ও বেঁধে রাখার হুমকি দেয়।