টিএসসি‘তে আ‘লীগ নেতা কর্তৃক ছাত্রীদের ইভটিজিং।উল্টো অভিযোগকারীকেই থানায় সোপর্দ।

0
0

সমাজের কন্ঠ ডেস্ক – ইভটিজার নয় উল্টো ইভটিজিংয়ের শিকার হওয়া দুই ছাত্রীসহ তিন শিক্ষার্থীকে পুলিশে দিলো এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। ঘটনার শিকার ওই তিনজন ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। সোমবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) তে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ঘটনার শিকার শিক্ষার্থীরা ছুটির দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আড্ডা দিতে এসে ইভটিজিংয়ের শিকার হন বলে অভিযোগ করেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাহারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম (৪৭)। এ ঘটনার পরে তাকে ওই তিন শিক্ষার্থী মারধর করেন।

এরপর এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমন। তিনি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির এলাকার পরিচিত তিনি।

অভিযোগকারীরা হলেন ফারিহা মাহমুদ রুমী, নাফিয়া সাদেকা মম এবং নাইম মাহমুদ রুমী। তারা তিনজনই একই ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে নাইম ছাড়া বাকি দুই জন তৃতীয় বর্ষে পড়ে। নাইম পড়ে চতুর্থ বর্ষে।

অভিযোগকারী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ওই তিন শিক্ষার্থী ছুটির দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঘুরতে এসেছে। প্রায় এই ক্যাম্পাসে আড্ডা দিতে আসা হয় তাদের।

টিএসসিতে বসে আড্ডা দেওয়ার সময় চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম তার প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে ওই দুই ছাত্রীকে লক্ষ্য অনেকক্ষণ যাবৎ গোপন অঙ্গ নাড়তে থাকে। পরে তাদের মধ্যে ফারিহা বিষয়টি বুঝতে পারলে তার পাশের বান্ধবীর সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করে। পরে তারা তিন বন্ধু-বান্ধবী বসা থেকে দাঁড়ালে ওই লোক আস্তে আস্তে টিএসসির গেইটের দিকে হাঁটতে থাকে।

এরপর তাজুলকে থামাতে ওই তিন শিক্ষার্থী টিএসসির গেইটম্যান কিরণকে ইশারা দেয়। ওই লোক তখন টিএসসির মেইন গেইটের সামনে চলে আসেন। সেখানে তারা তিনজনই অভিযুক্ত তাজুল ইসলামকে মারধর করে।

পরে ঘটনাটি তাজুল ইসলাম তার এলাকার পরিচিত ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমনকে জানায়। এর কিছুক্ষণ পর সুমন কিছু লোক নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন।

এর আগে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা এসে উপস্থিত হন। তারা তাজুল ইসলাম এবং ঔই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে রিয়াজ উদ্দিন সুমনও ওই দুই ছাত্রীর কাছ থেকে বিস্তারিত শোনেন।

ঘটনাটি শুনে তিনি ওই তিন শিক্ষার্থীকে থানায় দিতে প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যদের নির্দেশ দেন। এরপর প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজুভাস্কর্যের সামনে নিয়ে যান। সেখানে সুমনের নিদের্শে ওই তিন শিক্ষার্থীকে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেন প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা। তখন সুমন সঙ্গে করে অভিযুক্ত ওই চেয়ারম্যানকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত তাজুল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘আমি টিএসসিতে দাঁড়িয়ে প্যান্টের পকেটে হাত রেখে ফোনে কথা বলতেছি। কথা শেষে আমি টিএসসির বাইরের দিকে এগোলে তারা পিছন থেকে আমাকে ডেকে মারধর করে। তারা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে তা সত্য নয়।’

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমন বলেন. ‘ওই লোক আমার এলাকার। তিনি একজন চেয়ারম্যান, সম্মানিত ব্যক্তি। তার নামে তিন শিক্ষার্থী যে অভিযোগ করেছে তা সত্য-মিথ্যা কতটুকু জানি না। তবে তারা তাকে ব্যাপক মারধর করেছে। এটা খুব খারাপ করেছে। এজন্য তাদের পুলিশে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান বলেন, ‘একজন ছাত্রসহ দুজন ছাত্রীকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।’ কি অভিযোগে সোপর্দ করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি থানায় নাই, বিষয়টি এখনও জানি না। তবে তাদের অভিভাবকের হাতে দিয়ে দেওয়া হবে।’

—- ইত্তেফাক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here