যশোরের ঝিকরগাছার বাঁকড়া বাজার সড়কে বেপরোয়া চাঁদাবাজি

0
0
মোঃ রায়হান হোসেন – যশোরের ঝিকরগাছার বাঁকড়া বাজার সড়কে বাঁকড়া বাজার ইজারাদার কমিটির নামে যানবাহনে বেপরোয়া চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চাঁদা না দিলে মারধর পর্যন্ত করা হচ্ছে। কিন্তু চাঁদাবাজি বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অভিযোগ আছে প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ম্যানেজ করেই চলছে এ চাঁদাবাজি।
বাঁকড়া বাজার সড়ক দিয়ে চলাচল করেন এমন সাত-আটজন যানচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, ঝিকরগাছা উপজেলার চারটি ইউনিয়নের সমন্বয়ে বাণিজ্যিক নগরী হিসেবে পরিচিত বাঁকড়া বাজার। বাজারের কওমী মাদরাসার সামনে লাঠি হাতে কিছু যুবক দাঁড়িয়ে থেকে প্রতিদিন চাঁদা তোলেন। তাদের বেশির ভাগই স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে এলাকায় পরিচিত।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাজার ঢোকার আগে মাদরাসার সামনে যানবাহন আসামাত্রই চাঁদাবাজরা সেটিকে থামাচ্ছে। তারপর বাঁকড়া বাজার ইজারাদার কমিটির নামে রশিদ দিয়ে চাঁদা দাবি করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি ট্রাক, পিকআপ ও ট্রাক্টর থেকে ১০০ টাকা, নছিমন ৩০-৫০, ভ্যান থেকে ২০, থ্রিহুইলার ও ইজিবাইক থেকে ৩০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হাজিরবাগ গ্রামের জিয়া, হাফিজুর, নান্টু, সোনাকুড় গ্রামের মনি, রাসেল, রায়পটন গ্রামের বাপ্পা, ইমন, সালাম, আলীপুর গ্রামের রফিক ও নাছিরের নেতৃত্বে চলছে এ চাঁদাবাজি।
বাজারে আসা ইনসেপ্টা, বেক্সিমকো, ইউনিলিভার, প্রাণ, আরএফএল ও আকিজ গ্রুপের কোম্পানির গাড়িচালকরা বলেন, টাকা না দিলে দোকানে মালামাল নামাতে বাধা দেওয়া হয়। গাড়ি আটকে রেখে মারধর করে। চাঁদার এ টাকা আমাদের পকেট থেকে যায়।
স্থানীয় এক ইজিবাইকচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা ইজিবাইক চালিয়ে যে টাকা পাই, তা দিয়ে সংসারই চলে না। চাঁদা দিতে গিয়ে আমাদের সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে।
বাঁকড়া বাজার কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সামাদ খা বলেন, যানবাহন থেকে টাকা তোলা হচ্ছে সত্যি। শুনেছি ইজারাদার তাদের কাছে ওই সেক্টরটা নাকি বিক্রি করেছে। তাই তারা টাকা তুলছেন। তারা নাকি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি জানিয়েই টাকা তুলছেন বলেও জানান সামাদ।
এ বিষয়ে বাজার ইজারাদার পলাশ খান বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান নিছার আলী আমার নামে বাজার ইজারা নিয়েছিলেন। আমার ব্যবসায়ীক ব্যস্ততার কারণে ওটা আমি দেখভাল করি না। আমার জানা মতে সরকারি নির্দেশনায় ইজারার ভিতর যানবাহনে টাকা তোলার কোনো বৈধতা নেই।
বাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিছার আলী বলেন, চাঁদা তোলার বিষয়টি আমার নলেজে নেই। ওষুধ কোম্পানির গাড়ি থেকে কেন টাকা নেওয়া হবে? এভাবে গাড়ি থেকে টাকা নেওয়া অবৈধ।
এ ব্যাপারে বাঁকড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ মেজবাহ উদ্দীন বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কথা হয় ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমি মজুমদারের সাথে। তিনি বলেন, এ রকম কোনো অভিযোগ পাইনি। খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here