তরিকুল ইসলাম,সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
হঠাৎ বিকালে এক বিকাশ এজেন্টের ফোনে রিংটন বেজে উঠল। কলটি রিসিভ করতেই একজনের কণ্ঠ ‘হ্যালো ভাইয়া আমি ডিএসও বলছি, আপনিতে বিকাশের নতুন এজেন্ট এ জন্য এ্যাপস পেতে অফিস থেকে কল দিতে পারে আপনি যে তথ্য চাই সঠিক দিয়ে সহযোগিতা করবেন৷
কলটি কেটে দেয়ার এক মিনিটের মধ্যেই একটি অজ্ঞাত ০১৫৭১২১০৬৯১ নম্বর থেকে এজেন্ট নাম্বারে ফোন আসে। ‘হ্যালো স্যার, আমি বিকাশ থেকে বলছি, আপনার নম্বরটি নতুন এজেন্ট অ্যাকটিভ করা হয়েছে। এ্যাপস এর মাধ্যমে লেনদেন করতে হলে আপনার এ্যাকাউন্টে সর্বনিন্ম ৫০ হাজার টাকা থাকতে হবে তা না হলে আপনি এ্যাপস ব্যাবহার করতে পারবেননা৷ মোবাইলে এ্যাপস সচল করতে আপনার এজেন্ট নাম্বারে ক্যাশইন করুন।’
এজেন্ট নাম্বারে ২৫ হাজার টাকা লোড নেওয়ার পরই নম্বর হ্যাক, সঙ্গে বিকাশ থেকে ০১৯৮৪১১৬৪৪৭ নাম্বারে সেন্ডনানি ম্যাসেজ ১২ হাজার ৮৯৯ টাকা৷ পরে মোট ৩৭হাজার ৮৯৯ টাকা খোয়া গেল তার। বলছিলাম সাতক্ষীরা কলারোয়ার তুলসীডাঙ্গা পারিখুপি এলাকার সহিল উদ্দীন দফাদারের ছেলে বিকাশ এজেন্ট ব্যাবসায়ী রবিউল ইসলামের কথা৷
বিকাশ এজেন্ট ব্যাবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আর্থিক লেনদেন গুলো প্রাথমিকভাবে ডিএসও এর সাথে বিভিন্ন পরামর্শ নিয়ে করা হয়৷ প্রথমে যে কলটি আসে হুবহু বিকাশের স্থানীয় ডিএসও জাহাঙ্গীর হোসেনের নম্বর দেখে আমি ফোনটি রিসিভ করলে অ্যাপস পাওয়ার ব্যাপারে অফিস তথ্য চাইতে পারে আপনি সঠিক তথ্য দিবেন বলে কলটি কাটেন৷ তাৎক্ষণিক অন্য একটি নাম্বার থেকে বিকাশের অফিসের পরিচয়ে কল দিয়ে এজেন্ট অ্যাপস পাওয়ার ব্যাপারে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা একাউন্টে রাখতে বলেন৷ ও আমার ফোনে আসা একটি পিনকোড জেনে নেন৷ একাউন্টে টাকা রিচার্জ করার পরেই দোকানে এসে দেখি আমার নাম্বার থেকে ১২ হাজার ৮৯৯ টাকা সেন্ট হওয়ার ম্যাসেজ ৷ এরপরই অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যায়, সেখান থেকে মোট ৩৭ হাজার ৮৯৯ টাকাও খোয়া যায়।’ অজ্ঞাতনামা হ্যাকারদের মাধ্যমে সেন্ডমানি হওয়া ০১৯৮৪১১৬৪৪৭ বিকাশ নাম্বারটি এখনো খোলা রয়েছে৷
হ্যাকারদের কবল থেকে টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি৷
এ বিষয়ে স্থানীয় বিকাশের কলারোয়া অঞ্চলে দায়িত্বে থাকা ডিএসও জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিকাশের এজেন্ট অ্যাপ চালু হয়েছে এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই৷ আমরা কেবল এজেন্টের কাছে টাকা ট্রান্সফার করি আমাদের নাম্বারটা কেবল বিটুবির জন্য ব্যবহার করা হয়৷ আর বিটুবি নাম্বার মূলত প্রথম হ্যাকাররা হ্যাক করে৷ আমার বিটুবির নাম্বার হ্যাক করে এজেন্ট এর সাথে কথা বলেন প্রতারিত করে৷ নাম্বার হ্যাক করে এজেন্ট রবিউল ইসলামের সাথে প্রতারণামূলক বিভিন্ন কথা বলে তার কাছ থেকে গোপন পিন কোড ও নাম্বার জেনে নেন৷এতে এজেন্টের ৩৭ হাজার ৮৯৯ টাকা হ্যাকারদের কবলে চলে যায়৷ সকল গ্রাহকদের পরামর্শ দিয়ে থাকি যে কখনো অফিস কোন গোপন পিন নাম্বার বা কোড নাম্বার জানতে চাইবে না এসব বিষয় থেকে সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলতে৷ কিন্তু বরাবর ভুল করে হ্যাকারদের কবলে পড়েন এজেন্ট বা গ্রাহকরা৷
এ বিষয়ে কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মীর খায়রুল কবীর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রবিউল ইসলাম নামে এক বিকাশ এজেন্ট ব্যাবসায়ীর টাকা হ্যাকাররা কৌশলে লোপাট করেছে এমন একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷