খুলনা জেলার ৬নং কয়রার শ্রীশ্রী গোবিন্দ জিঁউ মন্দিরের কৃষ্ণমুর্তি ভাংচুর

0
0

কয়রা প্রতিনিধি –
খুলনার কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৬নং কয়রা গ্রামের শ্রীশ্রী গোবিন্দ জিঁউ মন্দিরের কৃষ্ণ মুর্তি কে বা কারা ভাংচুর করেছে।

গত ২৩শে নভেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার ৬নং কয়রার শ্রীশ্রী গোবিন্দ জিঁউ মন্দিরের কৃষ্ণমুর্তি ভাংচুর হয়েছে। সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কয়রা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ রবিউল হোসেন, কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রধান শিক্ষক মোঃ হুমায়ুন কবির, সাংবাদিক রিয়াছাদ আলী, ছাত্র-যুব ঐক্য পরিষদের উপজেলা সভাপতি অরবিন্দ কুমার মণ্ডল কাশিয়াবাদ পুলিশ ফাঁড়ির ক্যাম্প ইনচার্জ টিপু সুলতান, ।

ঐ মন্দিরে সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় পূজা ও সন্ধ্যা প্রদীপ দেন স্থানীয় রোহিতোন মণ্ডলের স্ত্রী প্রমিলা মণ্ডল। তিনি বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় সন্ধ্যাবাতি দিতে এসে আমি দেখতে পাই মন্দিরের মেঝেতে গীতা ও কাগজের ফুলের মালায় আগুন জ্বলছে যা আমি নিভিয়ে ফেলি এবং মন্দিরে অবস্থিত কৃষ্ণ মুর্তির মাথা, দুই হাত ও দুই পায়ের কিছু অংশ ভাঙ্গা। তিনি আরো বলেন , দুপুর ১ টার দিকে যখন পূজা দিয়ে গেছি তখন সবই অক্ষত ছিল।

মন্দিরের সভাপতি পরিমল মণ্ডল ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলেন, আমরা দীর্ঘ প্রায় ৫০বছর যাবৎ শান্তিপূর্ণভাবে এই মন্দিরে পূজা-অর্চনা করে আসছি এবং মন্দিরটি হিন্দু অধ্যুসিত এলাকায় অবস্থিত হলেও এখানকার হিন্দু মুসলমান আমরা অত্যন্ত সম্পৃতির সাথে বসবাস করি।এ ঘটনা কারা ঘটিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেবা কারা ঘটনা ঘটিয়েছে তা বলতে পারবোনা। কারণ আমরা চোখে দেখেনি এবং কাহারো প্রতি সন্দেহও হয়না। ঘটনাটি পরিকল্পিত বলে মনে হয়। তিনি ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।

মন্দির কমিটির উপদেষ্টা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবু হরেন্দ্র নাথ সরকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক প্রকৃত দোষীদের শাস্তির দাবী জানিয়ে বলেন, নির্দোষীরা যেন হয়রানির স্বীকার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার দাবীও জানান তিনি।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের উপজেলা সাধারন সম্পাদক ধীরাজ কুমার রায় বলেন, ঘটনা জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমি সেখানে যেয়ে দেখতে পাই মন্দিরটি সংস্কার নির্মাণাধীন। যার জানালা দরজা নেই। মন্দিরের ভিতরে পূজা করার কাঠ দ্বারা নির্মিত মন্দিরাসনে বিভিন্ন দেব দেবীর ছবি ও ধর্মীয় গ্রন্থ অক্ষত অবস্থায় আছে। তবে একটি মাত্র গীতা বইয়ের উপরের দু’টি বা তিনটি পাতার কিছু অংশ আগুনে পোড়া এবং তার পাশে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুর্তির মাথা, দুই হাত ও দুই পা ভাঙ্গা এবং তার সামনে একটি কাগজের ফুলের মালার সামান্য অংশ আগুনে পোড়া। তবে মুর্তির ভাঙ্গা মাথাটি মুর্তির পিছনে রক্ষিত পোষ্টার ব্যানারের মধ্যে ফেলানো ছিল। কোন চক্রান্তকারী তার হীন ব্যাক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য এধরনের জঘন্য কাজ করেছে বলে মনে হয়। ঘটনার প্রকৃত দোষী যে ধর্মেরই হোকনা কেন তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান তিনি।

এ ব্যাপারে কয়রা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ রবিউল হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মন্দির কমিটি ও স্থানীয় জনগন মুর্তিটি ভাঙ্গতে কাউকে দেখেনি এবং কাউকে সন্দেহ করেননি। দোষী যেই হোকনা কেন সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক শাস্তির আওতায় আনা হবে। তবে কোন নিরীহ লোক হয়রানি না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখা হবে বলেও জানান তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here