সমাজের কন্ঠ ডেস্ক – গত বৃহস্পতিবার বিকেলে আকস্মিকভাবে সদর হাসপাতাল পরিদর্শন ও পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন নড়াইল-২ আসনের এমপি ও জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। সেই সাথে তিনি ডাক্তারদেরকে সমাজের আসল সুপারস্টার বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, আমার অভিযোগ ডাক্তারদের বিরুদ্ধে নয়, বরং আমার অভিযোগ ছিলো কর্তব্যে অবহেলাকারী একজনের বিরুদ্ধে।
সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গনমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন।
মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেন, আমি পার্সোনালি ওনাকে (ভুক্তভোগী ডাক্তারকে) সরি বলার জন্য ৫ বার ফোন দিয়েছি। এখনও সবার সামনে দুঃখ প্রকাশ করছি। ওনাকে ঐভাবে বলা আমার ঠিক হয়নি। আমি কিন্তু ডাক্তারদের স্যার বলি। কারণ ডাক্তাররা আসল সুপারস্টার। আমার আসলে শব্দ চয়নে আরও বেশি সতর্ক থাকা উচিত ছিল।
এমপি মাশরাফি বলেন, সমাজের বিত্তবান মানুষ তারা নড়াইলে ট্রিটমেন নিচ্ছেনা। নড়াইলে ট্রিটমেন কারা করা করাচ্ছে? সমাজের একদম রুট লেভেলের মানুষরাই ট্রিটমেন্ট করাচ্ছে। আমাদের এরকম ৯০ পার্সেন্ট মানুষ আছে যাদের ১০ টাকা দিয়ে টিকিট কিনার সামর্থ্য নাই। ১০ টাকা দিয়ে ওষুধ কিনার সামর্থ্য নাই। আমাকে তো ওইটুক নিশ্চিত করতে হবে। এজন্যই তো আমি এখানে আসছি। আমি কিজন্য অন্যায়ের সাথে আপস করবো?
ডাক্তারদের বড় সুপারস্টার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডাক্তাররা একটা মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে। আমরা খেলাধুলা করি, আমরা এখানে এই ইফেক্টটা রাখতে পারি না। আমরা খেলে মানুষের লাইফ সেভ করতে পারিনা, ডাক্তাররা পারে। আলটিমেট হিরু কিন্তু তারাই। আমি তো সব ডাক্তারদের এই কথাটা বলিনি বা বলতে পারবো না। সমাজের ৯০ পার্সেন্ট ডাক্তাররাই ভালো সার্ভিস দিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে আকস্মিকভাবে সদর হাসপাতাল পরিদর্শনে যান সাংসদ মাশরাফি বিন মুর্তজা। এ সময় হাজিরা খাতায় ৩ চিকিৎসকের স্বাক্ষর না দেখে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুস শাকুর এবং পরে অনুপস্থিত সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. আকরাম হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন মাশরাফি। পরে তিনি বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগীদের সাথে দেখা করেন এবং তাদের খোঁজখবর নেন।
পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভা করেন মাশরাফি। সভায় তিনি বেশ কিছু বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন। এর মধ্যে আছে- যেসব চিকিৎসক হাসপাতালে সময়মতো আসেন না ও অনুপস্থিত থাকেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, হাসপাতালে প্যাথলজিক্যাল সুবিধার সবটুকু যেন রোগীরা পায় তা নিশ্চিত করা, সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত চিকিৎসকদের হাসপাতালে অবস্থান করা, হাসপাতালের দুটি অ্যাম্বুলেন্স বাদে প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতালের ভেতরে না থাকা, দালাল চক্রের হাসপাতালে প্রবেশ ঠেকানো, সব রোগীর সরকারি ওষুধ প্রাপ্তির ব্যাপারে জবাবদিহি ইত্যাদি।