পদ্মায় স্রোতের ভয়াল তীব্রতায় ১০০ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে যাবার আশঙ্কা

0
3

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, পদ্মাসেতুর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ৩১টি বসানো শেষ হয়েছে। সেতুর ৩২তম স্প্যান বসানোর কথা ছিল গত মাসের শেষ দিকে। এমনকি বর্তমানে তিনটি স্প্যান পুরোপুরি প্রস্তুতও রয়েছে। কিন্তু স্রোতের তীব্রতার কারণে সেগুলো বসানো সম্ভব হয়নি।

পদ্মাসেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানায়, স্রোতের যে তীব্রতা দেখা যাচ্ছে তাতে স্প্যান বসানোর কাজে ব্যবহৃত ক্রেনকে টেনে সরিয়ে নিতে পারে। এই আশঙ্কায় স্প্যান ওঠানোর কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।

পদ্মাসেতুর প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, পানি এখনও বাড়ছে। গতবারের পানির লেভেলের তুলনায় এ বছর ৩০ সেন্টিমিটার (১ ফুট) বেশি উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানির পিক স্পিড ৩ দশমিক শূন্য ২ মিটার/সেকেন্ড। আর পদ্মায় যেখানে সেতু নির্মাণ চলছে সেই এলাকায় স্রোতের তীব্রতা আরও ভয়াবহ। সেখানে সেকেন্ডে ৩ দশমিক ৭৮ থেকে ৪ দশমিক ২৫ মিটার/সেকেন্ড গতিতে বিপৎসীমার ৭০ সেমি উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
সেতুর প্রকৌশলীরা জানান, সবগুলো স্প্যান বসানোর কাজ গত জুলাইয়ের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। করোনার কারণে স্প্যানের মালামাল দেশে পৌঁছাতে এক দফা দেরি হয়। এছাড়া করোনার কারণেও কাজের গতি কিছুটা কমে আসে। এখন সেতুর কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্ষা মৌসুমে পদ্মার উত্তাল স্রোত। সর্বশেষ টার্গেট ছিল ডিসেম্বরের মধ্যেই সবগুলো স্প্যান বসানোর কাজ শেষ করা। সেটিও এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে যাচ্ছে। আগামী বছরের জুনে পদ্মাসেতুর সব কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। এ অবস্থায় সেতুর কাজ আরও অন্তত ছয় মাস পিছিয়ে যেতে পারে।
প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, পদ্মায় স্রোতের তীব্রতা কমলেই স্প্যান বসানো শুরু হবে। নভেম্বরের মধ্যেই বাকি ১০টি স্প্যান স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এছাড়া মূলসেতুর ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ৭৫০টি এবং ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১ হাজার ২৫৬টি স্থাপন করা হয়েছে। আর মাওয়া ও জাজিরা ভায়াডাক্টে ৪৮৪টি সুপারটি গার্ডারের মধ্যে ১৭১টি স্থাপন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত পদ্মাসেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮০ দশমিক ৫০ শতাংশ বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here