ঢাকার মথুরা চক্রবর্তীর শক্তি ঔষধালয়ের প্রাচীন ইতিহাস

0
0
সমাজের কন্ঠ ডেস্ক – ঢাকার মথুরা মোহন চক্রবর্তীর শক্তি ঔষধালয়ের প্রাচীন ইতিহাস। বাবা লোকনাথের আদেশে ঢাকার মথুরা মোহন চক্রবর্তীর শক্তি ঔষধালয়।পুরনো ঢাকার জুবিলী স্কুলের প্রধান শিক্ষক মথুরামোহন চক্রবর্তী অল্প বয়সেই দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হন। পূর্ববঙ্গ এবং পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতিমান সব ডাক্তার-কবিরাজ দেখিয়েও সুস্থ হলেন না।
অবশেষে মৃত্যু পথযাত্রী মথুরা মোহনকে তার পরিবার বারদীর সাধকপুরুষ শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর নিকট নিয়ে গেলে বাবা লোকনাথের চিকিৎসা সেবায় পুরোপুরি সুস্থ হন।
এই ঘটনার পর বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী, মথুরা মোহন চক্রবর্তীকে আদেশ দিলেন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা চর্চা করে মানুষের সেবা করতে। অধ্যক্ষ মথুরা মোহন চক্রবর্তী বাবা লোকনাথের আশীর্বাদ নিয়ে ১৯০৮ সালে ঢাকায় গড়ে তুললেন শক্তি ঔষধালয়।
বাবা লোকনাথের সাথে মথুরা মোহন চক্রবর্তী
বিভিন্ন ঐতিহাসিক তথ্য থেকে জানা যায়, বাবা লোকনাথের নির্দেশে মথুরা মোহন শক্তি ঔষধালয়ের আয়ের সিংহভাগই দান করতেন।
শক্তি ঔষধালয়ের সাথেই ঢাকার স্বামীবাগে মথুরা মোহন, শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর নামে একটি আশ্রমও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা এখনো টিকে আছে।
মথুরা মোহন চক্রবর্তী ছিলেন নিঃসন্তান। এ অবস্থায় ১৩৫৯ বঙ্গাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করলে শক্তি ঔষধালয়ের মালিকানা নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা শুরু হয়। দীর্ঘ ৩৩ বছর এই মামলা চলে। কথিত আছে, এই মামলার কাগজপত্র ঠেলাগাড়ি করে নিয়ে উপস্থাপন করতে হয়। অবশেষে মামলায় রায় হয় তার ভাইপো লাল মোহন চক্রবর্তীর অনুকূলে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের হাতে শক্তি ঔষধালয় আর থাকেনি। নানা ঘাত-প্রতিঘাত, মামলা-মোকদ্দমা শেষে এর মালিকানা পরিবর্তিত হয়ে যায়।
মথুরা মোহন চক্রবর্তী ও তার ভাইপো লাল মোহন চক্রবর্তীর কোনো বংশধর ও আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ পাওয়া না গেলেও শক্তি ঔষধালয়ের মূল বিক্রয়কেন্দ্রের সামনেই তাদের বাড়িটি এখনো জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে।পুরনো ঢাকার স্বামীবাগ এলাকায়, নারিন্দার কাছে প্রাসাদোপম এ বাড়িটি একসময় ঢাকাবাসীর কাছে খুবই আকর্ষণীয় ছিল। প্রচুর অর্থ ব্যয় করে কলকাতা থেকে নকশা করিয়ে তা নির্মাণ করা হয়েছিল। গ্রিক ও ব্রিটিশ স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত আকর্ষণীয় বাড়িটি, যা টিকে আছে সেটাই অমূল্য রতন। বাড়ির সামনের দিকে বিশালাকৃতির থামগুলো মাটি থেকে উঠে গিয়ে মিলেছে দোতলার ছাদের সঙ্গে। ছাদের চারপাশেও রয়েছে গ্রিক নকশা। বাড়ির ভিতরে ডান পাশে দাঁড়িয়ে আছে শুধুই কতগুলো থাম। এই জায়গাটায় ছিলো এক সময় রং-মহল। বাড়ির সামনে ওপরে লেখা আছে শ্রী লালমোহন চক্রবর্তীর নাম। বাড়ির ভিতরে গেলেই মথুরা বাবুর রুচির পরিচয় মেলে। বিশাল বাড়ির প্রতিটি কক্ষ দেখেই চোখ জুড়ায়। বাড়ির এক পাশে আছে গভীর কূপ।বাড়িটি এখন ধ্বংসের মুখে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here