ন্যাটো’র গুপ্তচর ইভোন রিডলে তালেবানের হাতে আটকের পর মুক্তি ও ইসলাম গ্রহন

0
0

ডা. শাহরিয়ার আহমেদঃ আফগানিস্তানে ন্যাটো’র তালেবান বিরোধী গুপ্তচর ইভোন রিডলের আটকের পর মুক্তি ও ইসলাম গ্রহন।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ধ্বংসের কিছুদিনের মধ্যেই আমেরিকা আফগানিস্তানে হামলা শুরু করে। তখন আফগানিস্তানের ক্ষমতায় তালিবান। ওই আক্রমণে আমেরিকার অন্যতম সহযোগী হিসাবে ইংল্যান্ডও অংশ নেয়।

ইংল্যান্ড তাদের পক্ষ থেকে অনেকের মতো সাংবাদিক ইভোন রিডলেকে গুপ্তচর হিসাবে আফগানিস্তানে প্রেরণ করে। সাধারন আফগান মহিলাদের মতো হিজাব পরে গুপ্তচরবৃত্তি শুরু করেন ইভোন। মাসখানেক পর চরম যুদ্ধাবস্থায় তালিবানদের হাতে ধরা পড়ে যান ইভোন।

ইভোন তার ‘In The Hands Of Taliban’ বইতে সেই ঘটনা লিখেছেন এভাবে,’ধরা পরার পর দেখি কুড়ি/পঁচিশজন তালিবান বন্দুক তাক করে ঘিরে আছে। ভাবলাম মৃত্যু আর কয়েক সেকেন্ড বাকি। আবার ভাবলাম,এরা মনে হয় এতো সহজে আমাকে মারবেনা। নিশ্চয়ই সবাই মিলে আগে ধর্ষন করবে তারপর হত্যা করবে।
আতংকগ্রস্ত আমি এরকম ভাবতে থাকলাম। এরপর তালিবান যোদ্ধারা আমাকে একটি নির্জন ঘরে নিয়ে গেলো। এবার সবাই মিলে আমাকে ধর্ষন শুরু করবে এই ধারণা বদ্ধমূল হলো। নির্জন সেই ঘরে কয়েক ঘন্টা কেটে গেলো।
আশ্চর্য হলাম ! তখন পর্যন্ত কেউ তারা আমার শরীর স্পর্শ তো দূরের কথা, ভালো করে আমার চোখে চোখ পর্যন্ত রাখেনি। কিছুক্ষণ পর দুজন মহিলা এসে আমাকে তল্লাশি শুরু করলো এবং আমার শরীরে লুকানো রিভলবার নিয়ে নিলো। মহিলা দুজন বারবার আমার অভিসন্ধি জানতে চাইলো। শেষমেষ বলেই দিলাম,’আমি ইংল্যান্ডের সাংবাদিক এবং গুপ্তচরবৃত্তির জন্য আমাকে এখানে পাঠানো হয়েছে’। ভাবলাম,এবার হয়তো তারা আমাকে মেরে ফেলবে। কিন্তু তারা কই? কোথায় তালিবান ধর্ষক?

এভাবে দুদিন কেটে গেলো। আমি আর কোনো পুরুষ তালিবানকে দেখতে পাচ্ছিনা। যা কথাবার্তা হচ্ছে সব সেই মহিলা দুজনের সাথে। সেই মহিলা দুজন বদ্ধ ঘরে আমাকে নিয়ম করে খেতে দিচ্ছে আর জিজ্ঞাসাবাদ করছে। মনে মনে ভাবছি,’এরা এখনো আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে কেন? এরা এখনো আমাকে ধর্ষণ করেনি কেন?
আমিতো জানতাম তালিবান মানেই ধর্ষক, আমিতো জানতাম তালিবান মানেই অসভ্য, আমিতো জানতাম তালিবান মানেই নারীলোভী জানোয়ার’!
যাইহোক, এভাবেই কেটে গেলো ১১ দিন। তারপর ডিপ্লোমেটিক ভাবে পাকিস্তানের সাহায্যে সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় মুক্তি পাই আমি। ছেড়ে দেওয়ার সময় ইংলিশ ট্রানস্লেট একটা ‘কোরআন’ আমাকে উপহার দিয়েছিলো তালিবানরা।

ইংল্যান্ডে ফেরার পর আমার আত্মীয়, আমার কলিগ সবাই বারবার প্রশ্ন করতে থাকে,’তালিবান কেমন বর্বর?তারা কতবার তোমাকে ধর্ষন করেছে? কিভাবে ধর্ষন করেছে? ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমি শুধু মুচকি হেসে বলেছি, ‘তালিবানদের মারতে হলে বোমা লাগবেনা, উলঙ্গ মহিলা ছেড়ে দিলে ওরা লজ্জায় এমনিতেই মরে যাবে’।

টিকা : তালিবানদের উপহার দেয়া সেই কোরআন পড়ে পরে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছিলেন ইভোন রিডলে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here